Smartphone এর ব্যাটারির লাইফটাইম যখন কমে আসে তখন ফোনে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে থাকে। ফোনে ঠিকমতো না থাকে চার্জ, না চলে ফোন ভালোভাবে! সবকিছু মিলিয়ে নাজেহাল অবস্থা। কিন্তু আপনি চাইলে নিজে নিজেই এসব ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এক্ষেত্রে জানতে হবে Smartphone এর ব্যাটারি লাইফ বৃদ্ধি করার এই সহজ টিপস। যা আলোচনা করা হবে আজকের এই পিকাবু ব্লগে। সাথেই থাকুন।
১. স্মার্টফোনে ব্যাটারি সেভার মোড ব্যবহার করুন
স্মার্টফোনের ব্যাটারির যত্নে ব্যাটারি সেভার মোড ব্যবহার করতে পারেন। এক্ষেত্রে ফোনের ব্যাটারি লাইফ অনেকদিন ভালো কাজ করবে। মূলত বেশিরভাগ স্মার্টফোনে ব্যাটারি সেভার বা লেস পাওয়ার মোড থাকে। এই ফিচারটি ব্যবহার করতে হলে ফোনে ফিচারটিকে এক্টিভ করিয়ে নিতে হবে।
প্রতিটি স্মার্টফোনের উপরের মেন্যুতে ডাটা, ওয়াইফাই অপশনের পাশাপাশি এই ব্যাটারি সেভার মোড পেয়ে যাবেন। যা সিম্পলি অন করলেই ফোনে এর কাজ করা শুরু হবে। আর ম্যানুয়ালি এটিকে এক্টিভ করতে চাইলে সেটিংসে গিয়ে “ব্যাটারি” বা “পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট” অপশন ব্যবহার করতে পারেন। ব্যাটারি সেভার মোড সাধারণত ফোনের প্রসেসরের গতি কমায়। যা ফোনের পাওয়ার খরচ কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এই ফিচার ফোনের অ্যাপগুলিকেও অপ্টিমাইজ করে। যাতে করে অ্যাপগুলি কম পাওয়ার ব্যবহার করতে পারে। ব্যাটারি সেভার মোড অনেকসময় স্ক্রিনের ব্রাইটনেসকেও কমিয়ে রাখে। ব্যাটারি সেভার দিয়ে ফোন ব্যবহার করলে ফোনের ব্যাটারি লাইফটাইম অনেকদিন ভালো থাকে।
২. অ্যাপস এবং সফটওয়্যার আপডেট করুন
কখনো যদি লক্ষ্য করেন আপনার ফোনে দ্রুত চার্জ হচ্ছে না, ফোন ভালোভাবে কাজ করছে না বা ফোনে দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যাচ্ছে সেক্ষেত্রে ফোনের অ্যাপস এবং সফটওয়্যার আপডেট করে নিতে পারেন। স্মার্টফোনের ব্যাটারির যত্নে এই টিপসটি যথেষ্ট পরিমাণ কার্যকরী ভুমিকা পালন করে।
পাশাপাশি ফোনে প্রতিটি অ্যাপস এবং সফটওয়্যার আপডেট করতে পারলে দেখবেন ফোনের অধিকাংশ বাগ ফিক্স হয়ে যাবে। সেই সাথে প্রতিটি অ্যাপে পাবেন নতুন ফিচার ব্যবহারের সুযোগ। অনেক সময় আমাদের ফোনে বেশকিছু ম্যালওয়্যার অটোমেটিক্যালি যুক্ত হয়ে যায়। সফ্টওয়্যার আপ টু ডেট রাখার মাধ্যমে, আপনি এই ধরনের ব্যাটারি-ড্রেনিং ম্যালওয়ার থেকে ফোনকে রক্ষা করতে পারবেন।
৩. স্ক্রিনের ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখুন
যেসব কারণে আপনার Smartphone এর ব্যাটারি লাইফ সহজে বৃদ্ধি করা যাবে সেসব টিপসের মাঝে ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখা অন্যতম। গবেষণা বলছে ফোন ব্রাইটনেস কমিয়ে ব্যবহার করলে তুলনামূলকভাবে এর পাওয়ার অনেক কম খরচ হয়। ফলে দিনশেষে আপনার ফোনের ব্যাটারির উপর চাপ অনেকটা কম পড়ে। অন্যদিকে আপনি জেনে খুশি হবেন এই অভ্যাস আপনার চোখ ভালো রাখতেও সাহায্য করে৷ কম ব্রাইটনেসে ফোন চালালে চোখের উপর ডিভাইসের আলোর চাপটা অনেক কম পড়ে। দিনশেষে দেখবেন আপনার ফোনের ব্যাটারির পাশাপাশি আপনার চোখের স্বাস্থ্যও বেশ ভালো থাকছে!
যাদের ফোনে অটো ব্রাইটনেস অপশন চালু আছে তারা ম্যানুয়ালি এটি অফ করে দিতে পারেন। পরবর্তীতে সেট করে দিতে পারেন কম পরিমাণের ব্রাইটনেস। প্রয়োজনে যখন বাইরে ফোন ব্যবহার করার দরকার পড়বে তখন স্ক্রিনের ব্রাইটনেসটা বাড়িয়ে নিলেন! শুধু স্ক্রিনের ব্রাইটনেস না কমিয়ে স্ক্রিন টাইমআউটও কমিয়ে রাখার অভ্যাস করুন। এক্ষেত্রে ৪/৫ সেকেন্ড রাখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। এতে করে অপ্রয়োজনে ফোন অন থাকবে না এবং আপনার ফোনের চার্জও খু্ব একটা খরচ হবে না।
৪. ফোনের অপ্রয়োজনীয় ফিচার বন্ধ করুন
Smartphone এর ব্যাটারি লাইফ বৃদ্ধি করার সকল টিপসের মধ্যে এই টিপসটি অন্যতম। ব্যাটারি লাইফ ভালো রাখতে ফোনের অপ্রয়োজনীয় ফিচার বন্ধ করে দিন। দেখবেন আগের চাইতে অনেকটা কম পরিমাণেই ফোনের চার্জ খরচ হচ্ছে। হেডফোন, স্পিকার বা স্মার্টওয়াচের মতো ব্লুটুথ ডিভাইসগুলি ফোনের সাথে অটো কানেক্টেড থাকলে তা অফ করে নিন সেটিংসে গিয়ে। আপনার যদি ইন্টারনেট অ্যাক্সেসের প্রয়োজন না হয় বা ওয়াইফাই এরিয়ার মধ্যে আপনার ফোন না থাকে সেক্ষেত্রে ফোনের ওয়াইফাই সেটিংস অফ করে রাখুন।
পাশাপাশি অনেকের ফোনে দেখবেন অযথাই GPS চালু করা আছে। আপনার যদি ফোনের এই ফিচার ব্যবহারের প্রয়োজন না পড়ে সেক্ষেত্রে ফিচারটি সিম্পলি অফ করে রাখতে পারেন। এতে করে আপনার ফোনের ব্যাটারি লাইফ অনেকটাই বেড়ে যাবে। যাদের ফোনে এমন অনেক অ্যাপ আছে যেসব অ্যাপ অনেকদিন ব্যবহার করা হচ্ছে না তারা ফোনের সেটিংসে গিয়ে “অ্যাপস” বা “অ্যাপ ম্যানেজমেন্ট” অপশন থেকে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপসগুলি ডিলিট করে নিতে পারেন। সেই সাথে ফোনের চার্জ কম যাওয়ার ব্যবস্থা হিসাবে সেটিংসে গিয়ে ফোনের ভাইব্রেশন এবং হ্যাপটিক ফিডব্যাক অপশনও বন্ধ রাখতে পারেন। অটো-সিঙ্ক অপশন ইউজ করে ফোনে থাকা সব অপ্রয়োজনীয় একাউন্ট থেকে এক ক্লিকে লগআউট করুন বা বেরিয়ে আসুন।
৫. বুদ্ধি খাঁটিয়ে ফোন ব্যবহার করুন
ফোনে পুশ নোটিফিকেশন অপশন চালু করতে পারেন সেক্ষেত্রে দেখবেন অনেক কিছুই আপনি সহজে জানতে পারছেন। কারণ এতে যথেষ্ট কম পাওয়ার খরচ হয়। পাশাপাশি আপনার স্মার্টফোনে যদি OLED বা AMOLED ডিসপ্লে থাকে, তাহলে ডার্ক মোড ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার ফোন ব্রাইট কালারগুলি শো করাতে অনেক কম পাওয়ার খরচ করবে। ,নোটিফিকেশন, কল এবং কীবোর্ড প্রেসের জন্য ভাইব্রেশন অপশন ব্যবহার করলে যে ফোনের ব্যাটারি সেভিংয়ে সুবিধা পাওয়া যায় তা নিয়ে তো আগেই বললাম! আশা করি টিপসটি ইগনোর না করে কাজে লাগাবেন। পাশাপাশি আপনার ফোনের কোন অ্যাপ বা সার্ভিস অনেক বেশি পাওয়ার খরচ করছে তা জানতে ফোনের ব্যাটারি ইউজ মনিটর ব্যবহার করতে পারেন৷
ফোনের ব্যাটারি লাইফ ভালো রাখতে যাদের ফোনে ইমেইল, ক্যালেন্ডার এবং অন্যান্য অ্যাপে অটো সিঙ্ক অপশন আছে তারা তা অফ করে রাখতে পারেন। কোনো কল বা ম্যাসেজ কারো কাছ থেকে এক্সেপ্ট না করলে ফোনে সিম্পলি এয়ারপ্লেন মোড ব্যবহার করতে পারেন। বিশেষ করে ঘুমানোর সময় এই ট্রিকস কাজে লাগিয়ে আপনিও ফোনের ব্যাটার লাইফ বৃদ্ধির ব্যবস্থা করতে পারেন।
শেষ কথা
উপরোক্ত Smartphone এর ব্যাটারি লাইফ বৃদ্ধি করার ৫টি সহজ টিপস মেনে চলতে পারলে আশা করি আপনার স্মার্টফোনের ব্যাটারি অনেকদিন ভালোভাবেই কাজ করবে। তবুও যদি ব্যাটারি লাইফটাইমের ভালো কোনো গতি না দেখেন, সেক্ষেত্রে ভালো কোনো মেকানিকের সাহায্য নিতে পারেন। ধন্যবাদ পিকাবুর সাথে থাকার জন্য।