Vlogging সম্পর্কে জানেনা এমন মানুষ বর্তমানে খুব কমই পাওয়া যাবে। বর্তমান সময়ে বিশ্বব্যাপী একটি জনপ্রিয় পেশা বা শখ হলো Vlogging করা। আপনার যদি ইউটিউব ফেসবুক ইনস্টাগ্রাম এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট গুলোতে একটি নিজস্ব চ্যানেল বা পেইজ থাকে তাহলে আপনি Vlogging ভিডিও তৈরি করে বিশেষ জনপ্রিয়তা এবং ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। তবে হাই কোয়ালিটির Vlogging ভিডিও তৈরি করার জন্য এবং ভিডিও ও অডিও সঠিকভাবে ক্যাপচার করার জন্য বেশ কিছু প্রয়োজনীয় ডিভাইস এবং আনুষঙ্গিক এর প্রয়োজন পড়বে।
সঠিকভাবে আকর্ষণীয় Vlogging ভিডিও তৈরি করার জন্য ক্যামেরা, ড্রোন, মোবাইল, গ্রীন স্ক্রিন, এডিটিং সফটওয়্যার, মেমোরি কার্ড, মাইক্রোফোন ইত্যাদির মতো আরো কিছু প্রয়োজনীয় ডিভাইস ব্যবহার করা হয়। চলুন তাহলে Vlogging করতে কি কি ডিভাইস দরকার হয় তা আজকের আলোচনায় জেনে নেয়া যাক।
পিকাবুর আজকের ব্লগে Vlogging করতে যে সকল ডিভাইসের দরকার হবে সেগুলো নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো-
১. ক্যামেরা
একটি ভালো মানের ক্যামেরা হলো Vlogging এর মূল ভিত্তি। ভালো vlogging ভিডিও তৈরি করার জন্য অবশ্যই উন্নত মানের ক্যামেরার দরকার। কারণ অন্যান্য ডিভাইসের তুলনায় ক্যামেরায় তুলনামূলকভাবে ভিডিও স্পষ্ট এবং সুন্দর হয়। এজন্য ডিএসএলআর এর মত ক্যামেরা ব্যবহার করে যেতে পারে। ভালো মানের ভিডিও পাওয়ার জন্য ভালো মানের ক্যামেরা একটি অপরিহার্য উপাদান। এখানে অনেক ধরণের Action camera পাবেন, দেখে আসতে পারেন।
২. লেন্স
Vlogging করার ক্ষেত্রে ক্যামেরার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো লেন্স আলাদাভাবে কিনতে পাওয়া যায়। বর্তমানে ক্যামেরার জন্য ওয়াইড অ্যাঙ্গেল লেন্সগুলি বেশ জনপ্রিয় কারণ ক্যামেরায় এ ধরনের লেন্স ব্যবহারের ফলে হাই কোয়ালিটির ভিডিও গ্রাফিক্স পাওয়া যায়। লেন্স বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই আপনার ক্যামেরার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ লেন্সটি বাছাই করতে হবে।
৩. ট্রাইপড বা Gimbal
Vlogging করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস হলো ট্রাইপড বা Gimbal। ট্রাইপড বা gimbal ফ্লেক্সিবল হয়ে থাকে যা বিভিন্ন অ্যাঙ্গেলে ভিডিও ফুটেজ নিতে সাহায্য করে। এতে মোবাইল, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ইত্যাদি যুক্ত করে ভিডিও করা হয়। ভিডিও করার সময় ক্যামেরা বা মোবাইল স্থিতিশীল রাখার জন্য ট্রাইপড ব্যবহার করা হয়। এটি ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে আকর্ষণীয় দৃশ্য ক্যামেরায় ভিডিও করা যায়।
৪. মাইক্রোফোন
স্পষ্ট ও হাই কোয়ালিটির শব্দ বা অডিও ক্যাপচার করার জন্য এক্সটার্নাল মাইক্রোফোন গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিডিও করার সময় যাতে কথা স্পষ্ট শোনা যায় বা হাই কোয়ালিটির অডিও পাওয়া যায় এজন্যই মাইক্রোফোন ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বর্তমানে বিভিন্ন মডেলের ছোট বড় মাইক্রোফোন পাওয়া যায়। ভালো অডিও কোয়ালিটির জন্য অবশ্যই একটি ভালো মনের মাইক্রোফোন ব্যবহার করতে হবে।
৫. মেমোরি কার্ড
Vlogging এর জন্য ভিডিও করার পর ভিডিও ফুটেজ গুলো সংরক্ষণ করার জন্য হাই কোয়ালিটি ও হাই স্টোরেজ এর মেমোরি কার্ড ব্যবহার করা হয়। মেমোরি কার্ডের স্টোরেজ যত বেশি হবে আপনি তত বেশি ভিডিও ফুটেজ দ্রুত সংরক্ষণ করতে পারবেন। তবে অবশ্যই আপনার ডিভাইসের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ মেমোরি কার্ড ব্যবহার করতে হবে। এখানে অনেক ধরণের মেমোরি কার্ড পাবেন, দেখে আসতে পারেন।
৬. লাইটিং
হাই কোয়ালিটির ভিডিও ফুটেজ পাওয়ার জন্য ভালো মানের লাইটিং থাকাও অপরিহার্য। ভিডিও করার সময় যথেষ্ট লাইটিং এর জন্য LED প্যানেল, রিং লাইট এর মতো কৃত্রিম লাইটিং ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রাকৃতিক আলো আছে এমন জায়গায় ভিডিও করলে সবচেয়ে ভালো মানের লাইটিং পাওয়া যায়।
৭. গ্রিন স্ক্রিন
Vlogging করার ক্ষেত্রে একটি অন্যতম ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো গ্রিন স্ক্রিন। ভিডিওর ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করতে বা পোস্ট প্রোডাকশনের ক্ষেত্রে গ্রিন স্ক্রিন বিশেষভাবে ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের দৃশ্য বা ফুটেজের ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করার ক্ষেত্রে একটি সবুজ স্ক্রিন তৈরি করা হয় যা পরবর্তীতে ভিডিও এডিট করার সময় বিভিন্ন ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ডে রূপান্তরিত করা হয়।
৮. ড্রোন
আজকাল Vlogging এর ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় ফ্লাইং শট বা ভিডিও ফুটেজ ক্যাপচার করার জন্য ড্রোন ব্যবহার করা হয়। ড্রোন এমন একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা ভাসমান অবস্থায় অধিক উচ্চতা থেকেও ভিডিও ক্যাপচার করতে পারে। বিভিন্ন দৃশ্য বা ফুটেজের ফ্লাইং বা উড়ন্ত শট ক্যাপচার করার জন্য ড্রোন একটি উপযুক্ত ডিভাইস বর্তমানে অধিকাংশ Vlogger এধরনের ভিডিও ফুটেজ পাওয়ার জন্য ড্রোন ব্যবহার করে থাকে।
৯. অ্যাকশন ক্যামেরা
বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের অ্যাকশন ক্যামেরা পাওয়া যায় যা vlogging এর ক্ষেত্রে হাই কোয়ালিটির আকর্ষণীয় দৃশ্য ভিডিও করতে সাহায্য করে। GoPro এর মতো ছোট আকৃতির অ্যাকশন ক্যামেরাগুলো বিভিন্ন ধরনের এক্সট্রিম পরিস্থিতিতেও আকর্ষণীয় ভিডিও ফুটেজ ক্যাপচার করতে পারে এবং এ কারণেই আজকাল Vlogging এর ক্ষেত্রে অ্যাকশন ক্যামেরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
১০. এডিটিং সফটওয়্যার
Vlogging করার ক্ষেত্রে যেকোনো দৃশ্যের ভিডিও করার পর সম্পূর্ণ ভিডিও ফুটেজটি এডিট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং এক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়। Adobe premiere Pro, Final Cut Pro, iMovie ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে Vlogging এর ভিডিও এডিট করা যায়।
১১. এক্সটারনাল হার্ড ড্রাইভ
Vlogging এর ভিডিও ফাইলগুলো সংরক্ষণ করার জন্য এবং কম্পিউটারের মাধ্যমে এডিটিং করার পর ভিডিও ফাইলগুলোর জন্য যথেষ্ট স্টোরেজ নিশ্চিত করার জন্য এক্সটারনাল হার্ড ড্রাইভ ব্যবহার করা হয়। কম্পিউটার সেটআপ এর ক্ষেত্রে অবশ্যই একটি ভালো মানের এক্সটার্নাল হার্ট ড্রাইভ ব্যবহার করতে হবে। এখানে অনেক ধরণের হার্ড ড্রাইভ পাবেন, দেখে আসতে পারেন।
১২. স্মার্টফোন ও অ্যাপস
আজকাল অনেকেই Vlog ভিডিও তৈরি করার জন্য স্মার্টফোন ব্যবহার করে থাকে যা অনেকটা ক্যামেরার মতোই আকর্ষণীয় দৃশ্য ক্যাপচার করতে সক্ষম। স্মার্টফোনে Vlogging ভিডিও তৈরি করার জন্য বিভিন্ন ধরনের মোবাইল অ্যাপস রয়েছে যেগুলো ব্যবহার করে আকর্ষণীয় ভিডিও ফুটেজ তৈরি করা যায়। স্মার্টফোনের মাধ্যমে Vlogging করার ক্ষেত্রে এই অ্যাপসগুলো ব্যবহার করলে তুলনামূলক হাই কোয়ালিটির ভিডিও পাওয়া যায়। এখানে অনেক ধরণের প্রিমিয়াম কোয়ালিটির স্মার্টফোন পাবেন, দেখে আসতে পারেন।
শেষ কথা
একটি ভাল মানের Vlogging ভিডিও তৈরি করার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ও প্রয়োজনীয় ডিভাইস ব্যবহার করতে হয় যা ভিডিও ফুটেজ গুলোকে আরো আকর্ষণীয় করে তোলে। তবে এসকল ডিভাইস Vlogging এর ক্ষেত্রে ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই গুণগত মান, মডেল, কর্মদক্ষতা এর দিকগুলো বিবেচনা করতে হবে এবং এসকল Vlogging ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এরকম ব্লগ আরও পেতে পিকাবু ব্লগ ভিজিট করুন নিয়মিত।